‘জয় বাংলা’ বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলায় দেওয়া রায়ের আদেশের অংশে আদালত বলেন, ‘আমরা ঘোষণা করছি যে, জয় বাংলা বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে।’
এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি শেষে আজ মঙ্গলবার (১০ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসন ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদেশে বলা হয়, জাতীয় দিবসগুলোতে উপযুক্ত ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদাধিকারী ও রাষ্ট্রীয় সকল কর্মকর্তা সরকারি অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান যাতে উচ্চারণ করেন, সে জন্য বিবাদীরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
আদেশে আরও বলা হয়, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যাসেম্বলি শেষে ছাত্র-শিক্ষকগণ যাতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান উচ্চারণ করেন, সে জন্য বিবাদীরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে আগামী তিন মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. বশির আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ, আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার ও সহাকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম।
রায়ের পর আইনজীবী ড. বশির আহমেদ ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বলেন, জয় বাংলা কোনো দলের স্লোগান নয়, কোনো ব্যক্তির স্লোগান নয়, এটা হচ্ছে আমাদের ন্যাশনাল ইউনিটি। এই স্লোগান দিয়ে একদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো। এজন্য ‘জয় বাংলা’ কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করা যুক্তিযুক্ত।
উল্লেখ্য, ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা চেয়ে ২০১৭ সালে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. বশির আহমেদ। ঐ বছরের ৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রিটের ওপর রুল জারি করে। রুলে ‘জয় বাংলা’কে কেন জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। চলতি বছর ঐ রুলের ওপর শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেলসহ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবীরা ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান করার পক্ষে তাদের মত তুলে ধরেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ ‘জয় বাংলা’ কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।